বাংলাদেশে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হয় একুশে ফেব্রুয়ারি
আজ সারা বিশ্বে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে।
আজ থেকে ৭০ বছর আগে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিটি তৈরি হয়েছিল, সেই ৫২ ভাষা আন্দলনে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান আংশগ্রহন করেন এবং আমাদের মায়ের ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠিত হয় আমাদের বাংলাদেশে।
উনিশশ’ সাতচল্লিশ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই দেশটির রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে চাপিয়ে দেবার তৎপরতা শুরু হয়। এর পাশাপাশি আরবি হরফে বাংলা লেখার পরিকল্পনাও চালু করা হয়েছিল।
পাকিস্তান সরকারের মধ্যে আগাগোড়াই বাংলা ভাষা বিরোধী মনোভাব ছিল। বাংলাদেশি ইতিহাসবিদদের মতে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী বাংলা ভাষাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।
এর অংশ হিসেবে বাংলা ভাষায় আরবি হরফ প্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়, যার সূত্রপাত হয়েছিল ১৯৪৭ সালে।
পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী ফজলুর রহমান ছিলেন এ চিন্তার প্রবর্তক।
তিনি যুক্তি তুলে ধরেন যে পাকিস্তানের দুই অংশের জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি রক্ষার জন্য বাংলা ভাষায় আরবি হরফ প্রবর্তনের গুরুত্ব রয়েছে। পাকিস্তানের সব ভাষার অক্ষর এক হওয়া উচিত বলে তিনি প্রচার করতে থাকেন।
তার যুক্তি ছিল, পশতু, সিন্ধী এবং পাঞ্জাবী ভাষার হরফ আরবির মতো। সুতরাং বাংলার হরফও সে রকম হতে পারে।
আরবি হরফে বাংলা- অদ্ভুত এক চিন্তা
ইতিহাসবিদ ও ভাষা সংগ্রামী বদরুদ্দীন উমর সেসব ঘটনা খুব কাছে থেকে দেখেছেন।
তাঁর মতে ‘১৯৪৭ সাল থেকে শুরু হলেও আরবি হরফ প্রবর্তনের এই ষড়যন্ত্র ভালভাবে দানা বাঁধে ১৯৪৯ সালে’।
১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে করাচীতে পাকিস্তান শিক্ষক সমিতির একটি একটি সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সে সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে পাকিস্তানের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান বলেন, বাংলা ভাষায় আরবি হরফ প্রচলন করতে হবে। এর পক্ষে তিনি নানা যুক্তি তুলে ধরেন।
বিষয়টি নিয়ে ক্রমাগত আলোচনা এবং প্রচারণা চলতে থাকে।