পুরোদমে সংঘাত চলছে ইউক্রেন -রাশিয়ার মধ্যে। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মধ্য ইউক্রেনে ৫১ জনের মৃত্যুর পর পশ্চিমাঞ্চলে হামলায় প্রাণ গেছে আরও সাতজনের। রুশ অঞ্চল কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনা অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকলেও দোনেৎস্কে সেনা অভিযান আরও বাড়িয়েছে রাশিয়া। এরমধ্যেই ইউক্রেনের মন্ত্রিসভায় এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন।
ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি হাসপাতালে গতকাল (মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর) ভয়াবহ দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় রাশিয়া। অর্ধশতাধিক হতাহতের এ ঘটনা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর সবচেয়ে ভয়াবহ দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। কিয়েভ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে এই পোলতাভা রুশ সীমান্তে অবস্থিত কিয়েভ আর খারকিভের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করে। এরপরই পশ্চিমাঞ্চলের লাভিভে হামলা চালিয়েছে মস্কো।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ২৪ ঘণ্টায় খারকিভ, আভদিভকা আর দোনেৎস্কে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান, রকেট লঞ্চার আর আর্টিলারি।
এই হামলার চরম নিন্দা জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, শহরের পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা আংশিক ভেঙে পড়েছে। শীত সামনে রেখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গড়তে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করতে পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
এরমধ্যেই মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। কেবিনেট সদস্যসহ মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ছয় মন্ত্রীকে। এদের মধ্যে রয়েছেন কৌশলগত শিল্প মন্ত্রণালয়ের অস্ত্র উৎপাদন প্রধান। চলতি সপ্তাহেই মন্ত্রিসভায় নতুন নিয়োগ পাবেন অনেক সদস্য। মস্কো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সেনা সক্ষমতা বাড়ানো আর কুরস্কে ইউক্রেনের সেনা অনুপ্রবেশ বাড়ানোর মধ্যেই হচ্ছে এই রদবদল।
এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেই পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্কে সেনা অনুপ্রবেশ আরও বাড়িয়েছে কিয়েভ। রাশিয়া হামলা বাড়ালেও পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেন। ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, কুরস্কে পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুপ্রবেশ চলছে, যা শিগগিরই শেষ করা হবে।
এদিকে, রুশ নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিপাকে পড়ে গেছে কিয়েভ। এই অঞ্চলে হামলার কারণে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় পড়ে গেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও। যদিও রুশ জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলছে, পরমাণু পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো সুরক্ষিত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে মস্কো।