রোবোটিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স – এআই) ওপর গুরুত্বারোপ করে সম্প্রতি ঢাকা ও সিলেটের চারটি আলাদা জায়গায় ‘গ্রেট টকস’-এর দ্বিতীয় সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে যুক্তরাজ্যের গ্রেট ক্যাম্পেইন উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেশনে স্মার্ট বাংলাদেশে অবদান রাখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন খাতে এআইয়ের ব্যবহারসহ বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল বিষয়গুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। ‘গ্রেট টকস ১’-এর আলোচ্য বিষয় ছিলো জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব।
যুক্তরাজ্যকে পর্যটন, শিক্ষা ও ব্যবসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে গ্রেট ক্যাম্পেইন। এছাড়া, তারা গ্রেট স্কলারশিপ ও উইমেন ইন স্টেম স্কলারশিপের মতো বৃত্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা করছে। বিস্তৃত পরিসরে সহযোগিতার সম্ভাবনা উন্মোচন করতে এবং আগামী প্রজন্মের নেতা ও উদ্ভাবকদের সক্ষম করে তুলতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের অংশীদারিত্বে গত ১০-১৪ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রেট টকস ২’ লেকচার সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের ফুলার রোড অডিটোরিয়াম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সাস্ট) এবং মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি সিলেটে এই সেশনগুলো আয়োজিত হয়।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স বলেন, “যুক্তরাজ্যের যেসব উদ্ভাবন বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে সেসব বিষয় তুলে ধরার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করা এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করাই গ্রেট টকসের লক্ষ্য। এই আলাপের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্দীপনা তৈরি ও পেশাগত সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই।”
সেশনগুলোতে আলোচক হিসেবে ছিলেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার প্রফেসর সেতু বিজয়কুমার। তিনি বেশকয়েকটি বিশ্বখ্যাত রোবোটিক প্ল্যাটফর্মের রিয়েল-টাইম নিয়ন্ত্রণে বৃহৎ মাত্রার মেশিন লার্নিং কৌশল ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এর মধ্যে সার্কোস ও হোন্ডা আসিমো হিউম্যানোয়েড ও আইলিম্ব প্রোস্থেটিক হ্যান্ড রয়েছে।
অধ্যাপক বিজয়কুমার এ বিষয়ে বলেন, “এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এআই ও রোবোটিক্সই আমাদের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাব কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই এ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে আমাদের উচিত নতুন প্রজন্মের রোবট ও এআইকে কীভাবে মানুষের উপকারে ও বিভিন্ন খাতে কাজে লাগানো যায় এর সবচেয়ে ভালো উপায় খুঁজে বের করা। সর্বাধুনিক অ্যালগরিদম ও হার্ডওয়্যারের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে এবং সঠিক পরিস্থিতি ও চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে রোবট ব্যবহার করা যায় তা শেখার মাধ্যমে, এই সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি থেকে আমরা সবাই উপকৃত হতে পারি।”
এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর বাংলাদেশ টম মিশশা বলেন, “গ্রেট টকসে এআই ও রোবোটিক্স নিয়ে আলোচনা করার জন্য রোবোটিক্সের বরেণ্য অধ্যাপক সেতু বিজয়কুমারকে আমাদের মাঝে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বর্তমানের ডিজিটাল যুগে মানবজাতিকে আরও কার্যকরভাবে সহায়তা করার ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের এআই ও রোবোটিক্সের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করা খুবই জরুরি। গ্রেট টকসের এই সেশনগুলো তাদের জলবায়ু পরিবর্তন, মেশিন লার্নিং ও এআইয়ের মতো সাম্প্রতিক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শেখার প্রতি আরও বেশি আগ্রহী করে তুলবে।”
আলোচনায় সুগঠিত মাল্টি-মডেল সেন্সিং, শেয়ারড রিপ্রেজেন্টেশন এবং এআইয়ের মতো প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে রোবোটিক্সের সুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে পরিমাপযোগ্য রিয়েল-টাইম লার্নিং ও অ্যাডাপ্টেশন সহ শক্তিশালী মেশিন লার্নিং কৌশলের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।