হাল ফ্যাশন ডেস্ক
শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় মুখের ত্বক সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর। অনেকেই রূপচর্চায় নানা ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করেন। কারণ বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন এ ধরনের উপকরণের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
অধিকাংশ ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপকরণ ত্বকের স্বাস্থ্যরক্ষায় অত্যন্ত উপকারী এবং ত্বকে ব্যবহারে কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায়। কিন্তু এমন কিছু উপকরণও রয়েছে, যেগুলো ব্যবহারে তাৎক্ষণিকভাবে ত্বকের উপকার হয়েছে বলে মনে হলেও পরবর্তী সময় মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই হিতে বিপরীত হওয়ার আগে এবং ত্বকের নানা সমস্যা এড়িয়ে যেতে এসব উপকরণ সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরি।
১. লেবু
ত্বকের পরিষ্কারক হিসেবে লেবু কাজ করতে পারে এর অম্লীয় গুণের কারণে। বহুকাল আগে থেকে রূপচর্চায় বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে লেবুর রস ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। তবে লেবুর রস কখনোই সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা উচিত নয়। লেবুর রস প্রচণ্ড অ্যাসিডিক হয়ে থাকে, যা সরাসরি প্রয়োগে ত্বকে ফুসকুড়ি, জ্বালা ভাব এমনকি ফোসকাও তৈরি করতে পারে। ঘন ঘন লেবুর রসের ব্যবহার ত্বকের কোমল ভাব নষ্ট করে।
২. অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
নেকেই টোনার হিসেবে ত্বকে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করে থাকেন, যা মোটেও ত্বকের জন্য সুবিধাজনক নয়। আমরা সবাই জানি, ভিনেগার অ্যাসিডিক প্রকৃতির হয়। অ্যাপল সাইডার ভিনেগারও এর ব্যতিক্রম নয়। এটি সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকে জ্বালাপোড়া, র্যাশ ও শুষ্ক ভাব দেখা দেওয়ার পাশাপাশি ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট করে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এড়িয়ে চলাই যুক্তিযুক্ত।
৩. চিনি
স্ক্রাবার হিসেবে ত্বকে চিনির ব্যবহার বেশ প্রচলিত। চিনির স্ক্রাব ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। তবে চিনির ছোট ছোট কণায় থাকে ধারালো ভাব, যা ত্বকে ঘর্ষণের ফলে ক্ষতি হতে পারে। তাই ত্বকে সরাসরি চিনি ব্যবহার না করাই উত্তম। তবে অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪.টুথপেস্ট
অনেকেই ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে ত্বকে সরাসরি টুথপেস্ট প্রয়োগ করে থাকেন। তবে ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। টুথপেস্টে থাকে অ্যালকোহল, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মতো উপাদান, যা ত্বককে অত্যধিক মাত্রায় শুষ্ক ও রুক্ষ করে তোলে। এ ছাড়া টুথপেস্ট ত্বকের পিএইচ মাত্রা ব্যাহত করে এবং ত্বকে জ্বালাপোড়া ও র্যাশের সৃষ্টি করে। টুথপেস্টে সোডিয়াম লরিল সালফেট নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এই রাসায়নিক উপাদান দীর্ঘদিন ব্যবহারে ত্বকের ওপর কালো ছোপ তৈরি করে। এই দাগ-ছোপ সহজে দূর করা যায় না।
৫. বেকিং সোডা
রূপচর্চায় এক্সফোলিয়েটর হিসেবে বেকিং সোডার ব্যবহার খুব জনপ্রিয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বেকিং সোডা ত্বকের অ্যাসিড মেন্টল ভেঙে ফেলতে সক্ষম।অ্যাসিড মেন্টল ভেঙে গেলে ত্বকের নিজস্ব আর্দ্রতা রক্ষাকারী সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায় এবং ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে। নিয়মিত বেকিং সোডার ব্যবহার ত্বককে খুব পাতলা করে দেয়। ত্বককে এটি অতিরিক্ত স্পর্শকাতর করে তোলে। ফলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি সহজেই ত্বকে প্রভাব ফেলতে পারে।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম