রাজধানী ঢাকা একসময় ছিল দেশের অপরাপর অ*ঞ্চলের মানুষের কাছে স্বপ্নের শহর। কেউ এখানে আসত জীবিকার তাগিদে, কেউবা রাজধানীর সৌন্দর্য দেখতে। ঢাকা একসময় আক্ষরিক অর্থেই ছিল ছিমছাম গোছানো, দূষণমুক্ত শহর। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই ঢাকা এখন এক অসহনীয় বিরক্তিকর শহর। পদে পদে বিপদ এখানে। কংক্রিট আর ইট-পাথরের এ শহরে নির্মল বায়ু সেবন এক দুরাশা যেন। নেই সবুজায়ন, আছে বায়ুদূষণ থেকে শুরু করে নানা ধরনের দূষণ, যানজটে স্থবির এখানকার জীবন*প্রবাহ। কখনো তীব্র গরম, কখনো সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা এখানকার সাধারণ অভিজ্ঞতা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে স্থাপনা ও কংক্রিট আচ্ছাদিত স্থান থাকার কথা ৪০ শতাংশ, রয়েছে ৮২ শতাংশ। সড়ক, জলাশয় ও উন্মুক্ত জায়গা থাকার কথা ৬০ শতাংশ, রয়েছে মাত্র ২৪ শতাংশ। অগ্নিকাণ্ড ঘটছে আকছার। ওদিকে প্রতি একরে বসবাস করার কথা ১০০ থেকে ১২০ জনের, বিপরীতে বাস করছেন ৪০০ থেকে ৫০০ জন। এক কথায় বললে, এখন পর্যন্ত যদিও বা মানুষ কোনোভাবে বাস করছে এখানে, পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় একসময় হয়তো এ শহর থেকে পালাতে চাইবে অনেকে।
ঢাকাকে পরিকল্পিতভাবে সাজানোর মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছিল সেই ব্রিটিশ আমলেই, ১৯১৭ সালে। ঢাকা সমতল ভূমি আর বৃষ্টি*প্রবণ এলাকা, এ কথা মাথায় রেখেই করা হয়েছিল সেই পরিকল্পনা। কিন্তু প*রিকল্পনা কাগজপত্রেই রয়ে গেছে, বাস্তব রূপ পায়নি। বরং উলটো পথেই পরিচালিত হয়েছে পরিকল্পনাহীন এর সম্প্রসারণ। ১৯১৭ সালের পর আরও একবার ১৯৫৯ সালে মাস্টারপ্ল্যান করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্বাধীনতার পর রাজউকের নেতৃত্বে দেশের পরিকল্পনাবিদদের *সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) নামে আরও একটি মাস্টারপ্ল্যান করে। এগুলোর সবই পণ্ডশ্রম হয়েছে বলা যায়।