হুট করেই জীবন খুব বেশি কঠিন মনে হচ্ছে? ছোট ছোট এই ৩৫ অভ্যাস পরিবর্তন করে দেখুন। আপনার জীবন সহজ, স্বাস্থ্যকর আরও সুন্দর আর ইতিবাচক হতে বাধ্য।
১. বিছানার পাশে এক গ্লাস পানি রেখে দিন। ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি আপনার শরীরকে চাঙা রাখবে অনেকখানি। দুপুর ১২টার ভেতরে অন্তত চার গ্লাস পানি পান করুন।
২. দিনের আধা ঘণ্টা সময় প্রিয়জনের সঙ্গে কাটান। এ সময় মুঠোফোন, ল্যাপটপসহ সব ডিভাইস দূরে রাখুন। সঙ্গীকে নিয়ে হাঁটুন, গল্প করুন ও সারা দিনের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিন।
৩. মা–বাবাকে ফোন করুন। একসময় আপনার ব্যস্ততা কমবে, কথা বলার অনেক সময়ও হবে। কিন্তু তখন আর তাঁরা থাকবেন না।
৪. ফলমূল আস্ত খান। কেটে বা জুস করে খাওয়ার চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টি পাবেন।
৫. অফিসে কাজের চাপে চ্যাপটা হয়ে গেছেন? দুপুরের পর সহকর্মীর সঙ্গে মিনিট দশেক আড্ডা দিন। অনেকখানি চাঙা লাগবে।
৬. যেকোনো এক্সারসাইজই আপনার শরীরের জন্য ভালো। কোনো কিছু করার না থাকলে বাইরে থেকে পাঁচ মিনিট হেঁটে আসুন। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান।
৭. বিরক্ত, হতাশ বা ক্ষুধার্ত অবস্থায় কেনাকাটা করতে যাবেন না। কারণ, এতে ‘ইমপালসিভ শপিং’ বা উল্টাপাল্টা খরচ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি।
৮. অফিস ও পরিবারের বাইরেও আলাদা একটা বন্ধু বলয় তৈরি করুন।
৯. পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষটার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসুন। হাসির চেয়ে সুন্দর জিনিস এই পৃথিবীতে আর কয়টা আছে?
১০. রাতে ঘুম আসছে না? বিকেলের নাশতার তালিকা থেকে চা আর কফি বাদ দিয়ে দিন।
১১. রোদ, বৃষ্টি যা-ই হোক, দিনের অল্প কিছু সময় ঘরের বাইরে কাটান।
১২. ঘুম থেকে ওঠার পরেই বিছানা গুছিয়ে ফেলুন। আগোছালো বিছানা আপনার রুটিন এলোমেলো করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
১৩. প্রতিদিন অনেকটা সময় ফেসবুকে থাকেন? আজকের দিনে ফেসবুক আনইনস্টল করে দেন।
১৪. বহুদিন কোনো বন্ধুর সঙ্গে কথা হয় না? ফোনটা আজকেই দিয়ে ফেলুন।
১৫. তাড়াহুড়া করে খাবেন না। যতই ব্যস্ততা থাকুক, আস্তে–ধীরে সময় নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে খাবার খান।
১৬. আবহাওয়া খারাপ হলেই ঘরে বসে থাকবেন না; বরং সঠিক পোশাকটা পরে বাইরে বের হয়ে যান।
১৭. বহুদিন লাইব্রেরি বা বইয়ের দোকানে যাওয়া হয় না? আজ যান। সামনের শুক্র ও শনিবার পড়ার জন্য কিছু বই ধার করে নিয়ে আসেন। আসলেই পড়বেন কি না, সেটা পরে দেখা যাবে। রাতে ঘুমানোর আগে বইয়ের পাতা উল্টানোর অভ্যাস করুন। ঘুমের মানও ভালো হবে। বছর শেষে দেখবেন, এক ডজন সুন্দর বই পড়া হয়ে গেছে!
১৮. সুন্দর পোশাকে বাইরে বের হন।
১৯. একটু আলাদা কিছু রান্না করুন। হতে পারে সেটা ভিন্ন দেশের ভিন্ন কোনো পদ। খেতে যেমনই হোক, আনন্দ পাবেন শতভাগ। ইউটিউব দেখে নতুন কিছু চেষ্টা করতে নেই মানা।
২০. প্রিয়জনকে মেসেজ বা ই–মেইল তো অনেক হলো, আজ নাহয় খাতা–কলম নিয়ে বসে একটা চিঠিই লিখে ফেলেন। অথবা মনের ভেতর যা কিছু এলোমেলো লাগছে, লিখতে বসুন। সমস্যা লিখে ফেলুন। লেখালেখির অভ্যাস তৈরি করুন।
২১. রাত ৯টার মধ্যে মুঠোফোন আর ল্যাপটপ বন্ধ করে দিন। রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মুনির নানা মত, রিলস ও ঝগড়াঝাঁটি দেখার চেয়ে ভালো ঘুম বেশি জরুরি।
২২. ছাদ বা বারান্দায় রোদ আসে? আজ কাপড়গুলো বের করে শুকাতে দেন।
২৩. অ্যালবামে তুলে রাখা ছবিগুলোর কথা ভুলে গেলে চলবে? ছবিগুলো বের করে করতে পারেন স্মৃতিচারণা!
২৪. ঘরের কোণে বা অফিসের ডেস্কে খানিকটা সবুজ রাখুন। গাছের যত্ন নিন।
২৫. দুপুরের পর অল্প সময়ের জন্য একটু ঘুমিয়ে নিন। নিদেনপক্ষে ঝিমিয়ে নিন।
২৬. বন্ধু খুব ভালো কিছু করেছে? অভিনন্দন জানান। উদ্যাপন করুন। ট্রিট দিন।
২৭. রাজনৈতিকসহ কোনো আলোচনায় অংশ নিলে নিজের মত সবার ওপর চাপিয়ে দেবেন না; বরং মনোযোগ দিয়ে সবার কথা শোনার অভ্যাস করুন।
২৮. গরমে খুব বেশিই হাঁসফাঁস লাগছে? নিজেকে একটা আইসক্রিম ট্রিট দিয়ে ফেললে কেমন হয়? ভালো কিছু করেছেন? সেটা হতে পারে ছোট কোনো লক্ষ্য। নিজেকে ট্রিট দিন। উপহার দিন। চাঙা (মোটিভেটেড) রাখুন।
২৯. ভুল করে ফেললে যখনই অনুধাবন করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে স্বীকার করুন।
৩০. মানুষ হিসেবে আপনি কতটা পরিণত, সেটা নির্ভর করে কোনো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মুহূর্তে আপনি কতটা মাথা ঠান্ডা রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তার ওপর।
৩১. সব সময়ই চেনা রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করেন? এক দিন নাহয় অচেনা রাস্তা দিয়েই বাড়ি ফিরলেন। আরেক দিন হয়তো হেঁটে বাড়ি ফিরলেন। আশপাশটা ভালোভাবে চিনুন।
৩২. সঙ্গে সব সময়ই ছোট একটা শপিং ব্যাগ আর পানির বোতল রাখতে ভুলবেন না।
৩৩. ক্ষুধার্ত অবস্থায় কারও সঙ্গে তর্ক করবেন না।
৩৪. মাঝেমধ্যে পায়ের জুতা জোড়া খুলে ফেলুন। সবুজ ঘাসের ওপর পা ছুঁয়ে হেঁটে বেড়ান।
৩৫. মাঝেমধ্যে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান। সামর্থ্য থাকলে কোনো এতিম শিশুর দায়িত্বও নিতে পারেন।
মোটাদাগে কাজগুলো ছোট ছোট। খুব বেশি সময় বা পরিশ্রম লাগার কথা নয়। আট ঘণ্টা ঘুম, আট গ্লাস পানি ও ভালো খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে এই ছোট্ট অভ্যাসগুলোর ২৫টি (৭০ শতাংশ) যদি আপনার ভেতরে থাকে, আপনি সঠিক পথেই আছেন। এই ছোট্ট কিছু পদক্ষেপই যখন আপনার জীবনে বিরাট ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিতে পারে, তখন আর দেরি কিসের?