ঢাকা: জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের আগে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ‘ক্যান্সারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন চাই’ শীর্ষক পথনাটক করেছে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র-ডরপ।
জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণ, শাহবাগ, ঢাকাতে ডরপ যুব ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত পথনাটকের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে তামাক পণ্য ব্যবহারে ক্যান্সারের ঝুঁকি সম্পর্কে বার্তা দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে ক্যান্সারমুক্ত বাংলাদেশে অর্জনে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।দ্য ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) হিসাব অনুযায়ী, কেবল ২০২২ সালেই বিশ্বে ২ কোটি নতুন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং ৯৭ লাখ মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ধূমপানকে ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটির মতে, তামাক ব্যবহার পরিহারসহ অন্যান্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে ক্যান্সারে মৃত্যুর ঝুঁকি ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধ করা সম্ভব। তামাকের প্রাদুর্ভাব কমানোর জন্য অন্যতম উপায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি শক্তিশালীকরণ।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী এবং ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশান অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্প্রতি উত্থাপিত প্রস্তাবনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সব ধরনের পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সব ধরনের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
পথনাটকটি সমাপ্তির পর ক্যান্সার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন- তানিয়া সুলতানা, তথ্য কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং আবদুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশ।
তারা ডরপ যুব ফোরামের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান।
ডরপ বিগত ১৯৮৭ সাল থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রবর্তনকারী সংস্থা হিসেবে সমধিক পরিচিত। এরই ধারাবাহিকতায় ডরপ বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও তামাক কর বৃদ্ধি বিষয়ে কাজ করছে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।