শিল্পীর চোখে কৃষ্ণগহ্বররয়টার্স
নতুন এক গবেষণায় জানা যাচ্ছে, কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল আসলে হিমায়িত তারা হতে পারে। এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ব্ল্যাকহোল তেজস্ক্রিয়া বিষয়ে একটি প্যারাডক্সের সমাধান করার সময় এ তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কৃষ্ণগহ্বর আসলে উদ্ভট একটি কোয়ান্টাম বস্তু হতে পারে।
নতুন গবেষণার ফলাফলে ব্ল্যাকহোল পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় এক প্যারাডক্সের সমাধান দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ নতুন গবেষণা বলছে, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে ব্ল্যাকহোল আসলে বৈশিষ্ট্যহীন ও গঠনহীন সত্তা হতে পারে না। এর পরিবর্তে কৃষ্ণগহ্বর এমন মহাজাগতিক দানব, যা আসলে হিমায়িত তারা নামের অদ্ভুত এক কোয়ান্টাম বস্তু হতে পারে।
হিমায়িত তারা আসলে ব্ল্যাকহোলের অনুকরণকারী। অদ্ভুত এই বস্তু ব্ল্যাকহোলের মতো পর্যবেক্ষণযোগ্য বৈশিষ্ট্য অনুকরণ করতে পারে। বিজ্ঞানী রামি ব্রুস্টেইন বলেন, যদি আসলেই এমন বস্তু থাকে, তবে আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্বকে মৌলিক উপায়ে পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা আসবে। হিমায়িত তারকা তত্ত্বের বর্ণনা ফিজিক্যাল রিভিউ ডি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে প্রথম কার্ল শোয়ার্জচাইল্ড ১৯১৬ সালে ধারণা দেন। প্রাথমিকভাবে কৃষ্ণগহ্বরের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি এককতা, যেখানে সব ভর ঘনীভূত হয়। আর একটি দিগন্ত সীমানা। একটি সীমানা থাকে, যা থেকে কোনো কিছুই, এমনকি আলোও পালাতে পারে না। পরবর্তী সময় কোয়ান্টাম মেকানিকস অনুসারে এই মডেলটির ত্রুটি দেখা যায়। ১৯৭০ দশকে স্টিফেন হকিং কৃষ্ণগহ্বরের দিগন্তের কাছাকাছি কোয়ান্টাম প্রভাবের কারণে শূন্যতার বাইরে কণা তৈরি হতে থাকে। এই প্রক্রিয়া হকিং বিকিরণ নামে পরিচিত। এই বিকিরণের ফলে ব্ল্যাকহোল ধীরে ধীরে ভর হারায় ও সম্পূর্ণরূপে বাষ্পীভূত হয়।
এখানেই প্যারাডক্স দেখা দেয়। এ বিকিরণটি ব্ল্যাকহোল তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে কোনো তথ্য বহন করে না। যদি ব্ল্যাকহোল সম্পূর্ণরূপে বাষ্পীভূত হয়, তবে তা চিরতরে হারিয়ে যাবে বলে মনে হয়। কোয়ান্টাম মেকানিকসের নীতি অনুসারে কোনো না কোনোভাবে তার তথ্য সংরক্ষিত হবে। তথ্য হারিয়ে যাওয়ার এ বিষয়টি প্যারাডক্স নামে পরিচিত। একে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের বড় একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হয়। বিজ্ঞানী রামি ব্রুস্টেইন বলেন, হিমায়িত তারকা মডেল ভবিষ্যতে বৈপ্লবিক প্রভাব ফেলবে।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স