বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে ত্বকের যত্নে এখন বিভিন্ন ধরনের তেলকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন করে লাইমলাইটে এসেছে তিলের তেল। পশ্চিমা দেশের অনেক স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড তাদের পণ্য তৈরিতে এই তেল ব্যবহার করছে। কারণ, ত্বকের হাজারও সমস্যার সমাধান আছে তিলের তেলে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তিলের তেলকে সব তেলের রানি মানা হয়। এ ছাড়া একে বলা হয় ‘ফাউন্টেন অব ইয়ুথ’ বা ‘তারুণ্যের ফোয়ারা’। তিলের তেল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেল। এর গুণের কোনো শেষ নেই। ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধানে এর জুড়ি মেলা ভার।
তিলের তেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। এ জন্য এটি পরিবেশগত কারণ যেমন অতিবেগুনি রশ্মি, দূষণ ও টক্সিন দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে ত্বকের কোষগুলোকে রক্ষা করতে পারে। তিলের তেলে বেশ কয়েকটি ফেনোলিক যৌগও রয়েছে, যা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে। এতে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিডও রয়েছে। এই অ্যাসিডগুলো ত্বককে কোমল, মসৃণ ও হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে।
শুষ্ক ত্বকের যত্নে
তিলের তেল একটি অসাধারণ ময়েশ্চারাইজার। রোজ এই তেল ব্যবহারে ত্বক নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। লিনোলিক অ্যাসিড ও অন্যান্য ফ্যাটি অ্যাসিডের শক্তিশালী সংমিশ্রণের কারণেই এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য সেরা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হয়ে উঠতে পারে। অন্যান্য ত্বকের অধিকারীরাও এই তেল রূপচর্চার একদম শেষ ধাপে ‘ফেস অয়েল’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, তিলের তেল আর্দ্রতা আটকে ত্বকের ওপরে একটি পাতলা প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করতে পারে।
ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধে
ভিটামিন ই ছাড়া তিলের তেলে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। আর ফ্যাটি অ্যাসিড তো আছেই। সব উপাদান একসঙ্গে মিলে ত্বককে বার্ধক্যের হাত থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া ত্বকের রোমকূপ ছোট রাখে। পাশাপাশি যদি ফাইন লাইনস বা বলিরেখা দেখা দেয়, তা কমাতেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
ব্রণ নিরাময় ও প্রতিরোধে
তিলের তেলের অন্যতম বড় গুণ হলো এর নন–কমেডোজেনিক বৈশিষ্ট্য। নন–কমেডোজেনিক উপাদান ত্বকের রোমকূপকে বন্ধ করে না। রোমকূপ বন্ধ হলে সেখান থেকে হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস এমনকি ব্রণও হতে পারে। তিলের তেলে থাকা অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান ব্রণ নিরাময় করতে সহায়তা করে।
পিগমেন্টেশন বা দাগছোপ দূর করে
ত্বকে নানা কারণে পিগমেন্টেশন বা দাগছোপ দেখা দিতে পারে। তিলের তেলে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট এই পিগমেন্টেশন বা দাগছোপ দূর করার ক্ষমতা রাখে। ত্বকের রোদে পোড়া ভাব বা ট্যানও কমাতে পারে এই তেল।
চর্মরোগ উপশমে
যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল, তাঁদের ত্বকে একজিমা, সোরাইসিস, ফুসকুড়ি, লালচে ভাব হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ত্বকের এ ধরনের সমস্যায় তিলের তেল ব্যবহারে বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়। কারণ, এতে থাকা ভিটামিন ই ও বি ত্বকের এই সমস্যাগুলো নিরাময় করতে পারে।
ব্যবহারের নিয়ম
শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে দুই ফোঁটা তিলের তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। যাঁদের ত্বক মিশ্র ও তৈলাক্ত, তাঁদের এই আবহাওয়ায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলেও চলবে। এর বদলে তিলের তেল ব্যবহার করা যায়।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম