বগুড়ার শাজাহানপুর এলাকায় একসময় অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ করতেন দুই ভাই মুন্না ও পান্না। তখন মুন্নার ফুট-ফরমাশ খাটতেন নুরু নামের একজন। সময় ও প্রেক্ষাপট বদলেছে। বদলেছে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণকর্তাও। বদলায়নি শাজাহানপুর এলাকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চিত্র। এলাকার নানা অপকর্মের নিয়ন্ত্রণ এখন সেই নুরুর হাতে।
নুরুর পুরো নাম মো. নুরুজ্জামান। শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। শাজাহানপুরের দাপুটে ‘নুরু বাহিনী’র প্রধান তিনি। শাজাহানপুর উপজেলা সদরের মাঝিড়া থেকে শুরু করে বনানী, ফুলতলা, নয়মাইল, আড়িয়াবাজার, সাবরুলসহ উপজেলাজুড়ে তাঁরা দাপিয়ে বেড়ান। নির্যাতনের ভয়ে তাঁদের অপকর্মের কথা বলতে সাহস পান না কেউ।
গত শনিবার রাতে শাজাহানপুর থানায় ঢুকে অস্ত্র মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে নুরুজ্জামানসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসতে থাকে নানা অপকর্ম। শনিবারের রাতের হামলায় ৮ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার পর নুরুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৫টি গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল, মাদক ও দেশি অস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানসহ ৪৫ জনকে আসামি করে পৃথক আইনে দুটি মামলা হয়েছে। নুরুজ্জামান ছাড়া গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, আড়িয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন হাসান, কর্মী সাদ্দাম রবীন, রমজান আলী, মিরাজুল রহমান, আমিনুল ইসলাম ও মিঠুন মিঞা।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নুরুজ্জামানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতেই তাঁর বাসায় অভিযান চালিয়ে সাতটি গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল জব্দ করা হয়। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হাসান নাজমুলের বাগানবাড়ি থেকে আটটি গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে। তবে নাজমুল পলাতক।
কী হয়েছিল থানায়
শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার আড়িয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে দুটি বার্মিজ চাকুসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিঠুন হাসানকে আটক করেন উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান। তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশকে ফোন করেন নুরুজ্জামান। কিন্তু পুলিশ মিঠুনকে ছেড়ে না দিয়ে থানায় নেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৩৫-৪০ জনকে নিয়ে থানায় যান নুরুজ্জামান। তাঁরা মিঠুনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে প্রথমে ধস্তাধস্তি হয়। পরে তাঁরা হামলা করলে এসআই আনিসুরসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে থানায় আসেন ওসি শহীদুল। তখন ওসির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান নুরুজ্জামান। ওসি তাঁকে থানা থেকে বেরিয়ে যেতে বললে নুরুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করেন।
পুলিশ জানায়, পুলিশের প্রতিরোধের মুখে থানা থেকে বেরিয়ে মাঝিড়া বন্দরে তাঁরা নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে ২০০ থেকে ২৫০ জন ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাঁদের হাতে ছিল লাঠিসোঁটা ও লোহার পাইপ। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে তাঁরা ইটপাটকেল ছোড়েন। একপর্যায়ে লাঠিপেটা করে তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন ঘটনাস্থল থেকে নুরুজ্জামানসহ আটজনকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে থানায় আক্রমণ ও পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে রাতভর যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ ঘটনায় নুরুজ্জামানসহ ৪৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় আটক ৯ নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া দুই নেতার বাসা থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও ১৫টি গুলি উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে
কে এই নুরুজ্জামান
এলাকাবাসী, পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নুরুজ্জামানকে অনেকেই ‘ঠ্যাং (পা) কাটা নুরু’ বলে ডাকেন। ১৯৯০-এর দশকে তিনি সন্ত্রাসী সাজেদুর রহমান মুন্নার সহচর ছিলেন। তাঁর হয়ে নানা অপকর্ম করেন। ২০০০ সালের পর জামায়াতের কর্মী হন। জামায়াত নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলীর বড় ছেলে সাবেক শিবির ক্যাডার রুবেলের সঙ্গে তাঁর সখ্য হয়। তখন তাঁর বিরুদ্ধে রুবেলের হয়ে টেন্ডারবাজি, ভূমি দখলসহ নানা কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ আছে। বিনিময়ে নুরুজ্জামানকে মাঝিড়া বাজারের ইজারাদারি, মাঝিড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতিসহ বেশ কিছু সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়।
এক-এগারোর পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রভাবশালী নেতা বনে যান তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার আশীর্বাদে প্রথমে মাঝিড়া বন্দর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক হন। পরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। বিগত ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে তিনি মাঝিড়া ইউপির চেয়ারম্যান হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মাঝিড়াপাড়ার দিনমজুর নূর আলমের প্রথম পক্ষের ছেলে নুরুজ্জামান। নূর আলম অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা কর্মকর্তার জমি পাহারা দিতেন। দারিদ্র্যের কারণে বিদ্যালয়ের পা মাড়াননি নুরুজ্জামান। শৈশবে কয়েক দিন হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর মুন্না মাস্তানের ফুট-ফরমাশ খাটতেন। তাঁর সৎভাই নূর মোহাম্মদ শাজাহানপুরে যুবদলের রাজনীতি করেন।
গড়েছেন নিজস্ব বাহিনী ও টর্চার সেল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাজাহানপুর উপজেলায় জমি দখল, ইটভাটায় মাটি সরবরাহ, ইট ও বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, হাটবাজারের ইজারার টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন কারখানায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, দাদন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। মাঝিড়া ও আশপাশের কিছু যুবককে দিয়ে বিশাল ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তাঁরা নুরুজ্জামানের হয়ে চাঁদাবাজি, জমি ও বাড়ি দখল, কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করেন বলে অভিযোগ আছে। নিজের বাসায় বানিয়েছেন টর্চার সেল। নির্যাতনের ভয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না।
শাজাহানপুর সদরের বারুণীঘাটা মেলায় তেলি নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে শাজাহানপুরের বুড়িতলা এলাকায় যুবলীগ নেতা সাজেদুর রহমানকে (সাজু মিয়া) পা কেটে হত্যার চেষ্টা হয়। তখন মাঝিড়া বন্দর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন নুরুজ্জামান।
ওই ঘটনায় সাজেদুরের বাবা আবদুল জব্বার বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। সাজেদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি নুরুজ্জামান মামলার বিচার বাধাগ্রস্ত করতে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েছেন। এখন সাক্ষ্য গ্রহণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
গত বছরের মার্চে শাজাহানপুর ইউএনও কার্যালয় থেকে হাটের ইজারার ২২ লাখ টাকার পে-অর্ডারসহ দরপত্র ছিনতাইয়ের নেপথ্যেও নুরুজ্জামানের নাম উঠে আসে। তখন ইউএনও কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর মোজাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মাঝিড়া ইউপির চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
সূত্র জানায়, গত বছরের ২ মার্চ উপজেলার জমাদারপুকুর হাটের ইজারা পেতে দুজন দরপত্র দাখিল করেন। একজন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান ও অন্যজন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি আলহাজ শেখ। প্রথম পর্যায়ের দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে দরপত্র ছিনতাই করে আরেকজনের হাত দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন নুরুজ্জামান। পরে একটি বানানো দরপত্র জমা দেওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সাজেদুর রহমানকে ইজারা পাইয়ে দিতে দরপত্র ছিনতাই করা হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার রহিমাবাদ শালুকগাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবন ও গাছের নিলামকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীরকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নুরুজ্জমানের বিরুদ্ধে। উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে ৫০-৬০ জনকে নিয়ে নিলামে অংশগ্রহণ করতে চাওয়ায় যুবলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামানকেও হুমকি দেন।
নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে জামায়াত, ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও যুবদলের বেশ কয়েকজন নেতাকে স্বেচ্ছাসেবক লীগে পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একজন নেতা বলেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক বোরহান একসময় শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সাবেক শিবির ক্যাডার রুবেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন। রুবেলের সঙ্গে বিরোধের পর বোরহান নুরু বাহিনীতে যোগ দেন। পরে দপ্তর সম্পাদকের পদ পান। বোরহান চাঁদে সাঈদীকে দেখার গুজব ছড়ানোর ঘটনায় শাজাহানপুর ও সদর থানায় দুটি নাশকতা মামলার আসামি।
শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবুল বাশারের সঙ্গেও ওঠাবসা ছিল নুরুজ্জামানের। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওহাবুজ্জামান ২০১৩-১৪ সালে বিএনপির আন্দোলনের সময় উপজেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও নাশকতার একাধিক মামলা ছিল। নুরুজ্জামান তাঁকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ দেন। শনিবার রাতের ঘটনায় নুরুজ্জামানের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছেন।
একইভাবে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা হাসান নাজমুলকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক পদে বসানো হয়েছে। তাঁর বাসা থেকে বিদেশি পিস্তল জব্দ হয়েছে। সাবেক ছাত্রদল নেতা রাসেল মাহমুদ এখন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সাইদুর রহমান শাজাহানপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করেছিলেন। নাশকতার মামলায় একাধিকবার জেলও খেটেছেন। তিনি সহসভাপতির পদ পেয়েছেন। শনিবার রাতে তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সন্ত্রাসী থেকে কোটিপতি
মুন্না মাস্তানের অনুসারী হিসেবে অপরাধজগতে বিচরণ নুরুজ্জামানের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওস্তাদকে টক্কর দেন। জমি দখলের মাধ্যমে যুবক বয়সে একসময় মুন্না মাস্তানের সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র কর্তা বনে যান। জমি দখল থেকে শুরু করে কারখানায় উপকরণ সরবরাহ, চাঁদাবাজি সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন। রাতারাতি ভাগ্য খুলে যায়। অল্প সময়ে প্রচুর সম্পদের মালিক বনে যান। রাতারাতি মাঝিড়া বন্দরে কয়েক কোটি টাকা দামের ৬ শতক জমি দখল করে গড়ে তোলেন চারতলা পাকা ভবন ও বাণিজ্যকেন্দ্র। পৈতৃক মাটির বাড়ি ছেড়ে ওই বাসায় ওঠেন। সেখানে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব কার্যালয়। বেসরকারি সংস্থার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দাদন ব্যবসা করারও অভিযোগ আছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এক যুগ আগেও ছিঁচকে সন্ত্রাসী ছিলেন নুরুজ্জামান। নানা অপকর্মে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার ভাড়াটে ক্যাডার ছিলেন। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে জমি দখলসহ অল্প দিনে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগে পদ পাওয়ার পর ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে ছেড়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমানের (শাহীন) আশীর্বাদপুষ্ট নেতা হিসেবে পরিচিতি পান।
নুরুজ্জামান এক দশকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন বলে অভিযোগ আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একাধিক নেতা বলেন, নুরুজ্জামানের বাবা নুরুল আলম পাহারাদার ছিলেন। থাকতেন মাটির ঘরে। কিন্তু নুরুজ্জামান থাকেন মাঝিড়া বন্দরে চারতলা বাসায়। চড়েন পৌনে এক কোটি টাকা দামের দুটি গাড়িতে। বেশ কয়েকটি ট্রাক, একটি ইটভাটা ছাড়াও কোটি টাকার ঠিকাদারি ব্যবসা আছে। ডমনপুকুর এলাকায় প্রায় ৪ একর আয়তনের পুকুর আছে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান অবশ্য নুরুজ্জামানের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তাঁর দাবি, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি ত্যাগী নেতা। তাঁর মতো নেতা সংগঠনের প্রয়োজন। জামায়াতের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। উল্টো তাঁর কারণেই শাজাহানপুরে জামায়াত-বিএনপি কোণঠাসা। নুরুজ্জামান ষড়যন্ত্রের শিকার বলে তিনি দাবি করেন।