মায়েরা বাড়িতে নানা দায়িত্ব দায়িত্ব পালন করেন। রাঁধুনি, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, মানসিক সমস্যায় কাউন্সেলিং ইত্যাদি নানা কিছু।ইন্টারনেট, ইউটিউবের যুগ আসার আগে রূপ চর্চার নানা টিপসও তারাই দিতেন।
কিভাবে ত্বক মসৃণ হবে, দীঘল কালো কেশ হবে ঘরোয়া নানা সামগ্রীর ব্যবহার করেই সেগুলো অর্জনের চেষ্টা চলতো।
ছোটবেলা থেকে হয়ত বাড়িতে দেখেছেন মুখমণ্ডলে বেসন মেখে রীতিমতো ভুত সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে বড় বোন।অথবা সপ্তাহে একদিন চুলে ডিম বা দই লাগাচ্ছেন অন্য কেউ।খাওয়ার সামগ্রী কিন্তু সেগুলো দিয়ে ঘরোয়া-ভাবে রূপচর্চা করা হতো বা এখনো হচ্ছে।কিন্তু সেগুলো কাজে লাগে কিনা সেনিয়ে মন্তব্য করছেন আসল বিউটিশিয়ানরা।
[বাড়িতে মুখমণ্ডলে বেসন মাখেন অনেকে]
ত্বকের আর্দ্রতায় ঘি, ত্বক মসৃণ করতে বেসন
এর ব্যবহার সম্পর্কে হয়ত শুনেছেন। বেসন পানি দিয়ে মাখিয়ে থকথকে করে নিতে হবে।তার পর সেগুলো ত্বকে মাসাজ করতে হবে। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।কিন্তু প্রসাধন বিজ্ঞানী ফ্লোরেন্স আদেপজু বলছেন, “ঘি খুব আঠালো বস্তু। এতে যে উচ্চমাত্রায় চর্বি রয়েছে যা ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। আমি বিউটি টিপ হিসেবে এটিকে না বলবো। আর ছোলা দিয়ে বানানো বেসন হয়ত ত্বক মসৃণ করতে কিছুটা আসতে পারে। কিন্তু দেখুন এগুলোতো ত্বকে লাগানোর জন্য বানানো হয়না। তাই রূপ চর্চায় এর ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।”
নরম চুল পেতে ডিম
খসখসে চুল অনেকেরই খুব অপছন্দ। শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার দিলে চুল নরম হয় বলে বিউটিশিয়ানরা বলে থাকেন।নারীর দীঘল কালো চুল নিয়ে এই উপমহাদেশে নানা গল্প রয়েছে।চুলে ডিম মাসাজ করে তা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধোয়ার পর নাকি চুল নরম হয়।কাচা ডিমের গন্ধ একদম সুখকর না হলেও বহু মেয়েদের এটি ব্যাবহার করতে দেখা যায়।হেয়ার আর্টিস্ট টলু আগোরো বলছেন, “আমাদের চুলের ভেতরটাতে রয়েছে প্রোটিন। আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে প্রোটিন থাকলে সেটি চুলের গোঁড়াকে শক্ত করে। এতে চুল ভাঙা বা আগা ফাটা কমে।””তবে ডিমে যে প্রোটিনের অণু রয়েছে তা চুলের কাণ্ডের জন্য অনেক বড়। ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামতে তা কাজ করে এই ধারনার সাথে আমি একমত নই।”
লেবুর রসে শরীরে পশম ব্লিচ করা
শরীরের লোম অনেকের অপছন্দ। অনেকেই হাত, পা ও মুখমণ্ডলের ত্বকের অতিরিক্ত লোম তুলে ফেলেন।অনেকে পাতলা লোম ব্লিচ বা সাদা করেন। লেবুর রসের এই ক্ষমতা আছে বল মেনে করা হয়।লেবুর রসে মধু মিশিয়ে লোমের উপর লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে রোদে বসে থাকলে লোমের রঙ হালকা হয় বলে বিশ্বাস করেন অনেকে।স্টাইলিস্ট ম্যাগাজিনের বিউটি এডিটর লুসি পার্টিংটন ঠিক সরাসরি বলছেন যা এটি কাজে আসে। তবে তিনি এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে সাবধান করে দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, “ত্বকে মধু মিশ্রিত লেবুর রস লাগিয়ে রোদে বসে থাকলে সূর্যের আলোতে ত্বক কি পরিমাণে পুড়ে যাবে চিন্তা করুনতো একবার। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শরীরের লোমকে সহজভাবে নিন। লোকে কি ভাবল তাতে কি আসে যায়?”
চুল চকচকে করতে ভিনেগার।
কুচকুচে কালো লম্বা চুল রীতিমতো আভা ছড়াচ্ছে। এ অঞ্চলে সুন্দর মেয়েদের যখন বর্ণনা দেয়া হয় তখন এমন চকচকে চুল তাদের থাকতেই হবে। এক বাটি হালকা গরম পানিতে ভিনেগার গুলিয়ে তা দিয়ে সপ্তাহে অন্তত একবার চুল ধুলে নাকি তেমন আভা ছড়ানো চুল পাওয়া যায়। হেয়ারড্রেসার ড্যানিয়েল ফারলে ম্যাকসুইনি বলছেন, “ভিনেগারের পরিষ্কার করার ক্ষমতা আসলেই আছে। এতে যে অ্যাসিড রয়েছ তা যা চুলে জমা যেকোনো ময়লা পরিষ্কার করে। তাতে চুল চকচক করবে সেটাই স্বাভাবিক। অ্যাসিড হয়ত চুল মসৃণও করে। তবে যাদের চুল শুষ্কও তাদের এটি ব্যবহার করা উচিত নয়।”