বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (২০২৪-২৬) মেয়াদি নির্বাচনে সম্পাদক পদ ফেরত চেয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল।
রবিবার (২৬ মে) ডিপজলের আইনজীবী এ কে খান উজ্জল এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘নিপুণের করা রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। তবে কেন শুধু ডিপজলের সম্পাদক পদ স্থগিত করা হয়েছে। এটি আইন বহির্ভূত।’
গত ১৫ মে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নাসরিন আক্তার নিপুণ। রিটে মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
নিপুণের পক্ষে এ রিট করেন অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায়। রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০ মে হাইকোর্ট বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদি নির্বাচনে সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে নির্বাচনে অনিয়মের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সব আদেশ দেন।
গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল ঘোষণা হয় ২০ এপ্রিল সকালে। ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। এতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জনপ্রিয় অভিনেতা মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন মনোয়ার হোসেন ডিপজল।
নির্বাচনে সভাপতি মিশা সওদাগর মোট ভোট পান ২৬৫টি। অন্যদিকে মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ডিপজল পান ২২৫ ভোট। ১৬ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন নিপুণ আক্তার (২০৯)।
সহ-সভাপতি পদে ২৩১ ও ২৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব। এছাড়াও সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান ২৩৭, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ২৫৫, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো ২৯৬, দফতর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর ২৪৫, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ২৩৫ এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল ২৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়।
কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হন ৯ জন। তারা হলেন– সুচরিতা (২২৮), রোজিনা (২৪৩), আলীরাজ (২৩৯), সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন (২১৮), শাহনূর (২৪৫), নানা শাহ (২১০), রত্না কবির (২৬৩) ও চুন্নু (২৪৮)। কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি (২২০) ও সনি রহমান (২৩০)।
উৎসবমুখর পরিবেশে ৪৭৫ জন শিল্পী ভোট দেন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের এই নির্বাচনে ছয় জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।