নিজস্ব প্রতিবেদক: ফিটনেস পরীক্ষা করতে আগামীকাল শনিবার ভোরে দেশের ক্রীড়াতীর্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের বিশেষ রানিং টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সে খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্রিকেট অনুরাগীদের একাংশের কৌতুহলি জিজ্ঞাসা, ‘এখন যারা জাতীয় দলে খেলেছেন, তাদের কেউ কি কখনো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলেছেন? কিংবা ব্যাট ও বল হাতে দেশের ক্রীড়াকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছেন কি? দেশের ক্রিকেটের খুঁটিনাটি যাদের নখদর্পণে, তারাও স্মৃতি হাতড়ে বের করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। তবে এখন জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও ‘পঞ্চপাণ্ডবদের’ বয়োজৈষ্ঠ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা অবশ্যই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলেছেন।
২০০১ সালের ২৫ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাশরাফি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। এছাড়া ঐতিহাসিক এই ভেন্যুর সঙ্গে মাশরাফি ও বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক বিরাট সাফল্য জড়িয়ে আছে।
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডে জয় পায়। চৌকস নৈপুণ্যে সেই জয়ের রূপকার ও নায়ক দুইই মাশরাফি।
ব্যাট হাতে ৯ নম্বরে নেমে ৩৯ বলে ৩১ রানের হার না মানা ইনিংস সাজানোর পর বল হাতে ভারতের ২ বড় ম্যাচ উইনার বিরেন্দর শেবাগ (০ রানে বোল্ড) ও মহেন্দ্র সিং ধোনিকে (১২ রানে হাবিবুল বাশারের হাতে ক্যাচ) আউট করে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জয়ের নায়ক হন মাশরাফি।হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পায় ১৫ রানের ঐতিহাসিক জয়।
মাশরাফি ছাড়া ‘পঞ্চপাণ্ডবদের’ বাকি ৪ পাণ্ডব- তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কেউ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের পক্ষে কোনো ম্যাচ খেলেননি। কারণ, তাদের ৪ জনের জাতীয় দলে অভিষেক হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৪ সালে ঢাকায় একটি জমজমাট প্রতিযোগিতামূলক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হয়েছিল। মাহমুদউল্লাহ অনেক কম বয়সে (১৮ বছর বয়সে) সেই আসরে খেলেছেন। ওই আসরের বেশ কয়েকটি ম্যাচ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রিয়াদ তাতে অংশও নিয়েছিলেন।
এছাড়া সাকিব আর মুশফিককে খুব ছোটবেলায় যারা কাছ থেকে দেখেছেন, এমন কয়েকজনের ধারণা- মুশফিক ও সাকিব বিকেএসপির বয়স ভিত্তিক দলগুলোর হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কোনো ম্যাচে অংশ নিলেও নিতে পারেন। এছাড়া সাকিবও ভিক্টোরিয়ার হয়ে প্রথমবার ঢাকা লিগের কোনো ম্যাচ খেলতেও পারেন।
আর তামিম তার চাচা আকরাম খান ও বড় ভাই নাফিস ইকবালের সঙ্গে অনেক কম বয়সে (১০-১২ বছর) বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনেক এসেছেন। মাঝে মধ্যে বড় ভাইয়ের ব্যাট নিয়ে নাড়া-চাড়াও করেছেন। কখনো কখনো ব্যাট হাতে কারো কারো বলে প্র্যাকটিসও করেছেন।
তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তামিম কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অংশ নিয়েছেন কিনা, কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
এই ৪ শীর্ষ তারকার বাইরে আর কেউ- মানে লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, শামীম পাটোওয়ারী, শাহাদত হোসেন দিপু, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, শেখ মেহেদি প্রমূখ- কারোরই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি। এমনকি কোনরকম অনুশীলনেও নামার সুযোগ হয়নি।